স্পোর্টস ডেস্ক: বিশ্বকাপ বাছাইয়ের প্রথম রাউন্ডের অ্যাওয়ে ম্যাচে নাটকীয় এক ড্র (১-১) করেছে বাংলাদেশ। ম্যাচে ৮৭ মিনিটে পিছিয়ে পড়ে ইনজুরি টাইমের দ্বিতীয় মিনিটে সাদ উদ্দিনের গোলে মালদ্বীপ থেকে এক পয়েন্ট নিয়ে ফিরছে জামাল ভূঁইয়ার দল।
প্রথমার্ধ গোলশূন্যভাবে শেষ হওয়ার পর দ্বিতীয়ার্ধে দুর্দান্ত ফুটবল খেলেও গোলের দেখা পাচ্ছিল না বাংলাদেশ। উল্টো ৮৭ মিনিটে রক্ষণের ভুলে গোল খেয়ে বসে লাল সবুজ জার্সিধারীরা।
ধরেই নেওয়া হয়েছিল, হেরে দেশে ফিরতে হচ্ছে ক্যাবরেরার শিষ্যদের। কিন্তু ম্যাচের নাটক যে তখনো বাকি! ইনজুরি সময়ের দ্বিতীয় মিনিটে রাকিবের পাস থেকে বদলি সাদ উদ্দিন গোল করে ম্যাচে সমতা ফিরিয়ে আনেন।
গত ২৩ বছরে মালদ্বীপের মাটিতে মালদ্বীপকে হারাতে পারেনি বাংলাদেশ। পারেনি এবারও। ঘরের মাঠে মালদ্বীপ টানা তিনবার বাংলাদেশকে হারিয়েছে এর আগে।
সেই জয়টা চারে নিয়ে যাওয়ার কাছাকাছিও পৌঁছে গিয়েছিল তারা। কিন্তু ৮৭ মিনিটে গোল করেও তা ধরে রাখতে পারেনি। ইনজুরি সময়ে গোল করে বাংলাদেশ হারা ম্যাচ ড্র করে মাঠ ছাড়ে।
এই ম্যাচ বাংলাদেশের দিকেই ঝুঁকে ছিল। বেশ কয়েকটি গোলের সুযোগ হাতছাড়া হওয়ায় প্রথমবারের মতো মালদ্বীপের মাটিতে মালদ্বীপকে হারানো যায়নি।
প্রথমার্ধের চেয়ে বাংলাদেশ দ্বিতীয়ার্ধে বেশি প্রাধান্য নিয়ে খেলেছে। যদিও ম্যাচের প্রথম সুযোগটি পেয়েছিল স্বাগতিকরা ১৮ মিনিটে। ডান দিক থেকে ঢুকে আলি ফাসির যে শট নিয়েছিলেন তা ফিরে আসে ক্রসবারে লেগে। এর পর দুটি সুযোগ এসেছিল বাংলাদেশের।
২৮ মিনিটে রাকিবের শট বাইরে গেলে এবং ৩৫ মিনিটে সোহেল রানার কর্নার থেকে বিশ্বনাথের হেড পোস্ট ঘেঁষে গেলে বেঁচে যায় মালদ্বীপ। এগিয়ে থেকে বিরতিতে যাওয়ার শেষ সুযোগ এসেছিল ৪০ মিনিটে। ফয়সাল আহমেদ ফাহিম একটি শট নিয়েছিলেন। কিন্তু পোস্টে রাখতে পারেননি।
বিরতির পর ক্যাবরেরার শিষ্যরা আরও প্রাধান্য নিয়ে খেলতে থাকে। ৫৩ রাকিব কোনাকুনি শট নিলে দ্বিতীয় পোস্ট ঘেঁষে বাইরে চলে যায়। এর দুই মিনিট পর জাতীয় দলে অভিষেক হওয়া গোলরক্ষক মিতুল মারমা মালদ্বীপের হাসান রাইফের পা থেকে বল কেড়ে নিয়ে দলকে রক্ষা করেন।
৭০ মিনিটে আরেকবার সুযোগ এসেছিল ফাহিমের সামনে। ডান দিক থেকে রাকিবের ক্রসে বল পেয়েও ঠিকঠাতমতো পোস্টে বল রাখতে পারেননি তরুণ এই ফরোয়ার্ড।
৭২ মিনিটে অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়ার বদলি হিসেবে মাঠে নেমে দুই মিনিট পরই গোলের সুযোগ পেয়েছিলেন রবিউল হাসান। কিন্তু তার নেওয়া শট ফিস্ট করে দলকে বাঁচান মালদ্বীপের গোলরক্ষক হুসাইন সারিফ। ৭৭ মিনিটে মালদ্বীপের আলি বাংলাদেশে গোলরক্ষককে একা পেয়েও গোল করতে পারেননি। মিতুল মারার মাথায় লেগে বল গতি পরিবর্তন করলে বাংলাদেশ বেঁচে যায়।
৮৭ মিনিটে বাংলাদেশ পিছিয়ে যায় ডিফেন্ডারদের ভুল বোঝাবুঝিতে। ডান দিক থেকে আসা ক্রস তারিক কাজি হেডে থামালে বাংলাদেশের এক ডিফেন্ডারের পায়ে লেগে চলে যায় ফাঁকায় দাঁড়ানো হাসান নাজিমের কাছে। নাজিম কোনো ভুল করেননি, মিতুল মারমার বাম দিক দিয়ে প্লেসিংয়ে বল জালে জড়িয়ে দেন।
ম্যাচ যখন ইনজুরি সময়ে গড়ায়, তখন বাংলাদেশ ডাগআউটে রাজ্যের হতাশা। হেরে ঢাকায় ফিরলে কমপক্ষে দুই গোলে জিততে হবে ফিরতি ম্যাচে। শেষ পর্যন্ত নাটকীয় ড্রয়ে রক্ষা বাংলাদেশের। এই গোলের উৎসও রাকিব। তার পাস থেকে সাদ গোল করে দেশকে এনে দেন মূল্যবান এক পয়েন্ট।
বাংলাদেশ হোম ম্যাচ খেলবে ১৭ অক্টোবর রাজধানীর বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনায়। ফিরতি ম্যাচ গোলশূন্য ড্র হলেই বাংলাদেশ উঠে যাবে বিশ্বকাপ বাছাইয়ের দ্বিতীয় রাউন্ডে। আর মালদ্বীপকে জিতলে হবে অথবা ড্র করতে হবে ২ বা তার অধিক গোলে।